পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস চলছে। চারদিকে আলোচনা হচ্ছে হজরত মহানবী সা. এর জীবনী বিষয়ে। এ মাসেই হজরত মহানবী সা. এই পৃথিবী আলোকিত করে জন্ম গ্রহণ করেন। বিদায়ও নিয়েছেন এ রবিউল আউয়ালে। তাই বিশ্বব্যাপী এ মাস ঘিরে হজরত মুহাম্মাদুর রাসুল্লাহ সা. এর জীবনচরিত আলোচনা-পর্যালোচনা হয়।
মুসলিম উম্মাহর দিল দরিয়ায় নবীপ্রেমের ঢেউ ওঠে। যদিও বার মাসই হজরত মুহাম্মাদুর রাসুল্লাহ সা. এর জীবনচরিত আলোচনা-গবেষণা ও যাপিত জীবনে বাস্তবায়ন প্রয়োজন। তবুও রবউল আওয়ালের এই মাসে হজরত মুহাম্মাদুর রাসুল্লাহ সা. এর জীবনচরিতের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী। তিনি একজন প্রবীন আলেম। ঢাকার চৌধুরীপাড়া মাদরাসার সাবেক প্রধান মুফতি ও সিনিয়র মুহাদ্দিস, বর্তমানে ঢাকার মিরপুরে খাদেমুল ইসলাম মাদরাসায় শিক্ষাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। সঙ্গে হাদিসে রাসুলের পাঠদান করছেন। প্রবীন এই আলেমের সঙ্গে বাংলাভায় সিরাত চর্চা, স্কুল কলেজ ও মাদরাসা সিলেবাসে মহানবী সা. জীবনী পাঠ্য করা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার প্রদান করেন তিনি।
মঙ্গলবার রাতে আওয়ার ইসলাম সম্পাদক হুমাযুন আইয়ুবের সঙ্গে এই ভাবনাবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। সঙ্গে ছিলেন দিদার শফিক। ছবি সাজিদ নূর।
আওয়ার ইসলাম : মহানবী সা. জীবনী পাঠ কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী : রাসুলের জীবনী পাঠের গুরুত্ব অসীম। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন, ‘ নিশ্চয় রাসুলের মাঝে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। যে ব্যক্তি আল্লাহর সান্নিধ্য ও পরকালের আশাবাদী তার জন্য মুহাম্মদ সা. এর জীবনী আদর্শ এবং তিনি সর্বক্ষেত্রে অনুসৃত ব্যক্তিত্ব।’ সুরা হাশরের ৭ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের কাছে রাসুলের আনীত বিষয়াবলি তোমরা গ্রহণ করো; মেনে চলো,আর তিনি যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকো।’কোরআনের এ দুটি আয়াত থেকে বোঝা যাচ্ছে, বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা. এর পুরো জীবনচরিত উম্মতের জন্য শিক্ষণীয় ও অনুকরণীয়।
কোরআনের ভাষায় নবি মুহাম্মদ সা. গোটা জগতের জন্য রহমতস্বরূপ। কোরআনের ভাষ্যমতে আল্লাহকে পেতে হলে নবিকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করা আবশ্যক। কেননা, কুরআনে উদ্ধৃত হয়েছে, ‘ যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তাহলে আমাকে (নবি সা.কে)অনুসরণ করো। তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন, তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দিবেন। তিনি ক্ষমাশীল , দয়ালু।’ হাদিসে আছে, নবি সা. বলেছেন, ‘ যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে ( আদর্শ,অনুসৃত জীবনী)ভালবাসলো সে যেন আমাকেই ভালবাসলো আর যে আমাকে ভালবাসলো সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।’ আয়াত ও হাদিস এ কথাই বলছে – নিঃসন্দেহে নবীর মুহাব্বত লাভ, আল্লাহর সান্নিধ্য ও দুনিয়া-আখেরাতে সফলতা নবি মুহাম্মদ সা. এর প্রদর্শিত পথে। তার প্রেম ও আনুগত্যের মধ্যে। তার হেদায়েত ও যাপিত জীবনের নমুনাই উম্মতের সফলতার মাপকাঠি। নবীর জীবনী ও আদর্শ জানা ছাড়া এ সফলতা অর্জন সম্ভব নয়।
নিরাপদে গন্তব্যে পৌছতে হলে সঠিক রাস্তা চিনতে হবে। নবী সা. কীভাবে নামাজ পড়েছেন, রোজা রেখেছেন, পারস্পরিক লেনদেন পদ্ধতি , ব্যবসা-বাণিজ্য কেমন ছিল, তার আচরণ ও সামাজিকতা কেমন ছিল, উদারতা, মানবতা নীতি-নৈতিকতা কেমন ছিল এসকল বিষয়ে সবিস্তার পাঠ প্রয়োজন।
আর এ প্রয়োজনীয়তাকে পূর্ণতায় এনে দিবে মহানবী সা.এর জীবনী পাঠ খুবই জরুরি। যিনি মুসলমানের সকল কাজের নমুনা ও আদর্শ, অনুসরণীয় ও পথিকৃৎ, তার জীবনী পাঠ ও চর্চা ছাড়া সফলতা অর্জন কী করে সম্ভব?
আওয়ার ইসলাম: হজরত রাসুল সা. এর জীবনকে ধারণ করার ফলে তার সময়ের একটি অন্ধকার সমাজ আলোকিত হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বা পৃথিবী যদি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা. এর জীবনকে ধারণ করতে পারে এবং সে অনুযায়ী নিজেদের জীবন ও সমাজকে সাজাতে পারে তাহলে আজকের জীবন ব্যবস্থায়ও অনেক আলো ছড়িয়ে পড়বে বলে আমরা মনে করি। আপনি বিষয়টির ব্যাখ্যা করেন?
মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী : হজরত মুহাম্মদ সা. এর আদর্শ ও জীবনচরিত সর্বকালীন, মহাকালীন ও চিরন্তন। হজরত আবু বকর রা., হজরত ওমর ফারুক রা., হজরত ওসমান, আলি রা. ও সকল সাহাবি নবী সা. এর জীবন ও আদর্শকে আঁকড়ে ধরার কারণে তারা ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মানবে পরিণত হয়েছিলেন।
তাদের মাঝে সত্য প্রকাশে অদম্য শক্তি-সাহস ও আধ্যাত্মিকতার এক অদৃশ্য শক্তি ছিল। তাদের জীবনই ছিল খোশবুময়।
মানবতা ও সুশৃঙ্খল পরিবেশবান্ধব। অশান্ত ও অস্থির পৃথিবী তাদের পরশেই শান্ত ও স্থির হয়েছিল।
আমি মনে করি , এখনো যদি রাসুলের আদর্শকে যথাযথভাবে গ্রহণ করা হয় তাহলে – ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিকমহলেও সাহাবিদের যুগের সুশীতল ছায়া, পরিমিতিবোধের আনন্দময়ী সমীরণ ও সর্বত্র শান্তিময় পরিবেশ ফিরে আসবে।
প্রতিষ্ঠিত হবে নির্যাতিতের অধিকার, ভালবাসা-সম্প্রীতি, ঐক্য-সংহতি, নিরাপত্তা ও মানবতার জীবন, সমাজ ও রাষ্ট্র।
জগতে এখন চলছে স্লোগান সর্বস্ব ‘মানবতা’। রাসুরের জীবনকে যথার্থভাবে আঁকড়ে ধরলে প্রকৃত মানবতা প্রতিষ্ঠিত হবে। রাসুলের অনুসরণের মাধ্যমে একালেও, এযুগেও সাহাবিদের যুগ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
আওয়ার ইসলাম : কৃষক-শ্রমিক থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরে রাসুলের আদর্শকে কীভাবে পৌঁছানো যেতে পারে?
মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী : এক কথায়, পরিবার –সমাজ, শিক্ষাঙ্গন সর্বত্র মহানবী সা. এর জীবনী পাঠ্য করা হলে, সমাজের সর্বস্তরে নবীজি সা. জীবনীর ব্যাপক চর্চা হলে সমাজ আলোকিত হবে।
এ জন্য কয়েকটি উদ্যোগও নেয়া যেতে পারে।
প্রথমত: স্কুল-কলেজ-ভার্সিটির সকল স্তরে হজরত মহানবী সা. এর জীবনী সিলেবাসভুক্ত করা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।
আমরা স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইগুলিতে চোখ বুলিয়ে দেখেছি সেখানে শুধু রাসুলের খণ্ড জীবনী বা কোন ভাষণের কিয়দাংশ স্থান পেয়েছে।
কোথাও সম্পূর্ণ জীবনী স্থান পায় নি। বাংলা,গণিত, ইংরেজির মত সিরাতকেও একটি আবশ্যক বিষয়ে পরিণত করা হলে নবীর আদর্শ সর্বত্র ছড়ানো বা পৌঁছানো খুব সহজ হবে।
দ্বিতীয়ত: মিডিয়ায় নবীর জীবনী চর্চাকে আরো ব্যাপক করতে হবে। রেডিও, টিভিতে সিরাত বিষয়ক একটি নিয়মতান্ত্রিক অনুষ্ঠান হতে পারে। যেখানে রাসুলের প্রাত্যাহিক জীবনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হবে।
রাসুলের নামাজ,রোজা, ইবাদত পদ্ধতি , ব্যবসা-বাণিজ্য ও সামাজিকতা কেমন ছিল?
তার নীতি-নৈতিকতা কেমন ছিল এ বিষয়ে তথ্যসমৃদ্ধ ও প্রামাণিক আলোচনা হতে পারে।
যারা বই পড়তে যানে না বা বইপাঠে আগ্রহী নয় তাদের কাছে রাসুলের জীবনীকে খুব সহজে এ পদ্ধতিতে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
তৃতীয়ত: পত্রিকায় অধিক হারে করে মহানবী সা. জীবনী বিষয়ক লেখালেখি করা। বর্তমানে ঘুম থেকে ওঠেই পত্রিকার পাতায় চোখ রাখা মানুষের স্বভাবে পরিণত হয়েছে।
পত্রিকাপাঠও এখন জীবনের একটি বিশেষ অংশে পরিণত হয়েছে। তাই পত্রিকাগুলোতে বেশি বেশি নবীর জীবনী ও আদর্শের কথা প্রকাশ নবীর জীবনী ও আদর্শ সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া সহজ হবে।
আওয়ার ইসলাম : বাংলা ভাষায় মহানবী সা. জীবন চর্চা কেমন হয়েছে?
মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী : এ দেশে বাংলা ভাষায় ব্যাপক চর্চা হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডশন সিরাত বিশ্বকোষ প্রকাশ করেছে।
মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. তার মাসিক মদীনার মাধ্যমে সিরাত সংখ্যা প্রকাশ করেছেন। বাংলা ভাষায় সিরাতবিষয়ক গ্রহণযোগ্য বিভিন্ন বই অনূদিত ও রচিত হয়েছে । এ কাজগুলো আরো বেশি বেশি করতে হবে। কিন্তু বই পাঠকের সংখ্যা খুবই সীমিত। যারা বইপাঠ করে না তাদের জন্য এফএম রেডিও, টিভিতে সিরাতের অনুষ্ঠান এবং দেশের সবখানে ‘ সিরাতমাহফিল ’ এর আয়োজন করা খুবই ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করছি। সময়টা এখন তথ্য-প্রযুক্তির । তাই মিডিয়ার গুরুত্ব অনেক। মিডিয়ার মাধ্যমে সিরাত চর্চা বড় পরিসরে সিরাত চর্চা হতে পারে। এর মাধ্যমেই রাসুল সম্পর্কে সমাজে প্রচলিত ভুল ধারণাগুলোও মিটানো সম্ভব। অজ্ঞতা থেকেই অনেকে ভুল পদ্ধতিতে রাসুলকে ভালবাসে।
আওয়ার ইসলাম : রাসুলের জীবনী চর্চা এটা কি শুধু রবিউল আউয়াল মাসকেন্দ্রীক না সারা বছরই চর্চা হওয়া দরকার?
মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী : রাসুল সা. আমাদের অনুসৃত ব্যক্তিত্ব। আমাদের যাপিত জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই তিনি আমাদের মডেল, নমুনা, অনুসরণীয়। বার্ষীক,মাসিক, বা সাপ্তাহিক উৎসব উদযাপনের মাধ্যমে তার জীবনী চর্চাকে আটকে ফেলা অনুচিত। অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রিয়জনের ভালবাসা ও অনুসরণের দাবিও এটা। রাসুলের প্রকৃত ভালবাসা তার দেখানো পথে তাকে অনুসরণ করার মাধ্যমে। কুসংস্কার আর বিদায়াত পালনে তো নবীর অনুসরণ হয় না।
আওয়ার ইসলাম: দেড়শ কোটি মানুষের প্রিয়তম ব্যক্তি মুহাম্মদ সা.। ৯৩% মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে শিশুশ্রেণি থেকে শিক্ষার উচ্চ পর্যায় মাস্টার্স পর্যন্ত শিক্ষা সিলেবাসে ‘ নবীর অখণ্ড জীবনী’ অর্ন্তভুক্ত করা হোক। আমাদের এ দাবির সাথে কি আপনি এক মত?
মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী : অবশ্যই , আমি এ দাবিতে এক মত। অত্যন্ত দুঃখজনক, এ দেশের জনসংখ্যার ৯৩% মুসলমান। কিন্তু দেশের জাতীয় শিক্ষা পাঠ্যক্রম বা সিলেবাসে নবীর অখণ্ড জীবনী নেই। যা আছে তা খণ্ড ঘটনা বা কোন ভাষণের কিয়দংশ । শিশুশ্রেণি থেকে নিয়ে শিক্ষার সর্বোচ্চ শ্রেনি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ-ভার্সিটির কোথাও সিলেবাসে পূর্নাঙ্গভাবে নবীর জীবনী নেই। শিক্ষার সর্বস্তরে, সকল শ্রেণিতে নবীর অখণ্ড জীবনী অর্ন্তভুক্ত করা হোক। সরকারের কাছে আমরা এ দাবি জানাচ্ছি। এটা সরকারের দায়িত্বও বটে। নবীর জীবনী পাঠ্য হলে দেশে সুনাগরিক, সমাজে আদর্শবান মানুষের সংখ্যা বাড়বে। অপরাধ ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠিত হবে। বিশেষভাবে যুবসমাজ নবীর আদর্শ গ্রহণ করার সুযোগ পাবে ফলে নৈতিক ও আর্থসামাজিকভাবে দেশ এগিয়ে যাবে।
আওয়ার ইসলাম: কওমি মাদ্রাসায় রাসুরের জীবনী যতটুকুপড়ানো হয় ,ততটুকু কি যথেষ্ট, না আরো বেশি পড়ানো উচিত?
মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী : কওমি মাদ্রাসায় আমার জীবনের পুরো সময়টাই কেটেছে। এখনো কাটছে এ পরিবেশেই। দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে শিক্ষা সমাপ্ত করে দেশে কওমি মাদ্রাসায় খেদমতে নিয়োজিত আছি দীর্ঘ ২৮ বছর যাবৎ।
আমি আমার দেখা ও অভিজ্ঞতা থেকে বলছি- কওমি মাদ্রাসাগুলাতে শুধু নাহবেমির জামাতে (সপ্তম শ্রেণিতে ) একটি সিরাতগ্রন্থ পাঠ্য বই হিসেবে আছে। মুফতি শফি রহ. রচিত ১০৬ পৃষ্ঠার ‘সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া ’ নামক গ্রন্থটি ছাড়া আর কোন সিরাতগ্রন্থ কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা সিলেবাসে নেই।
কাজেই এতো স্পষ্ট, কওমি সিলেবাসে নবীর জীবনী পর্যাপ্ত নয়। কওমি সিলেবাসে নবীর জীবনী পর্যাপ্ত নয় এ কথা বলা যথেষ্ট সঙ্গতও।
ব্যাপকহারে সিরাত পাঠ ও চর্চার জন্য শুধু সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া যথেষ্ট নয়। কওমি মাদ্রাসার মারহালায়ে উলা ও সানিয়া (উচ্চ মাধ্যমিক) ও ফজিলত আউয়াল ও সানি শ্রেণিগুলোতে আরও তথ্যবহুল , প্রামাণ্য সিরাতগ্রন্থ পড়ানো উচিত। কারণ এ সময়টাতে শিক্ষার্থীদের মন-মেধা ও চেতনায় পরিপক্কতা আসে। আর পরিণত বয়সে বয়সমাফিক তথ্যসমৃদ্ধ রাসুলের সিরাত পাঠ ও চর্চার প্রয়োজনীয়তা অনেক। এর একটি ইতিবাচক বৈপ্লবিক ফলও আছে।
ইদ্রিস কান্ধলবি রহ. রচিত ‘সিরাতে মুস্তফা’ বা এ জাতীয় অন্য কোনও সিরাত গ্রন্থকে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
আওয়ার ইসলাম: কুরআন-হাদিস সবই তো রাসুলর জীবনের অংশ, কিন্তু কুরআন-হাদিস পূর্নাঙ্গভাবে সুবিন্যস্ত জীবনী নয়। তাই কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কাছে আমরা এই দাবি জানাতেই পারি – কাফিয়া, শরহে বেকায়া, জালালাইন, মেশকাত ও দাওরা শ্রেণিতে পর্যায়ক্রমে মেধা ও তথ্যের বিচারে আরও ‘সিরাতগ্রন্থ’ পাঠ্যভুক্ত করা হোক। আমাদের এ দাবিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী : হ্যাঁ, এটা একটি প্রয়োজনীয় দাবি। কওমি মাদরাসার বোর্ডের কর্তৃপক্ষ বা দায়িত্বশীলগণ বিষয়টি সুবিবেচনা করবেন বলে আশা রাখি।
আমরা আশাবাদী, তারা এ দাবিকে বিবেচনায় আনবেন। মারহালায়ে সানাবিয়্যাহ, ও ফজিলতে তথ্যসমৃদ্ধ, প্রামাণ্য সিরাতগ্রন্থ সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করবেন।
আওয়ার ইসলাম: আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মুফতি আবদুর রাযযাক আল হোসাইনী : ধন্যবাদ তোমাকে এবং আওয়ার ইসলাম পরিবারকে।
আরআর
হালবে ভিনদেশি সন্ত্রাসীরা পরাজিত হয়েছে: সিরিয়ান মুফতি