শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

নাসিরনগর: গ্রেপ্তার আতঙ্কে ইসলামি নেতাকর্মীরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

b-baria4আওয়ার ইসলাম: নাসিরনগর ইস্যুতে গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ইসলামপন্থী নেতাকর্মীরা। দিন দিন ঘটনাটি আরো স্পর্ষকাতর হয়ে উঠছে। ডাল পালা ছড়াচ্ছে নানা ঘটনার।

 আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতপন্থীদের দাবি বর্তমানে তারাই আতঙ্কগ্রস্ত বেশি এবং প্রশাসন তাদের দিকেই দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে।

রসরাজের ফেসবুক আইডিতে পাওয়া কাবা শরিফের ছবি বিকৃত কেন্দ্র করে গত ৩০ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলা সদরে পৃথক দুটি বিক্ষোভ-সমাবেশ আয়োজন করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত।

দলটি দুটি সমাবেশের আয়োজন করে। দুটি সমাবেশেরই অনুমতি দিতে নারাজ ছিলেন অপসারিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মোয়াজ্জেম হোসেন। কিন্তু আত্মীয়তার দিক থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মৎস-প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাড. ছায়েদুল হকের ঘনিষ্ঠ নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম ও তার ভাই উপজেলা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাশেমের চাপে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সমাবেশের অনুমতি নির্বাহী কর্মকর্তা দিতে বাধ্য হন। প্রশাসন থেকে সমাবেশের অনুমতি পাওয়া ইসলামি সংগঠনের মধ্যে এটিই প্রথম।

সংগঠনটির দাবি, আমরা সমাবেশ করেছি সত্য। কিন্তু আমাদের কোনো অনুসারী হামলা সঙ্গে যুক্ত নন। উল্টো দত্তবাড়ির হামলা ঠেকাতে ঘটনাস্থলে আমাদের অনুসারী, পির বাড়ির ব্যক্তিরা জানপ্রাণ চেষ্টা করেন। আহতও হয়েছেন কেউ কেউ। এটা হিন্দু নেতা, সাধারণ হিন্দু-মুসলমান দেখেছেন স্ব-চক্ষেই। তারপরও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের পীর-মাশায়েখ, তাদের ভক্ত-অনুরাগী-অনুসারিদের দিকেই প্রশাসনের বদনজর বেশি।

তবে তিনি স্বীকার করেছেন- আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সমাবেশে অংশ নেয়া নামস্বর্বস্ব, কথিত অনুসারীরা হামলায় অংশ নিতে পারে। এটা সংখ্যায় ৫০ এর বেশি হবে না।

এদিকে, গ্রেপ্তারের জন্য বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে পুলিশ-র‌্যাব যৌথ অভিযান পরিচালনা করে সদর ইউনিয়নের দাঁতমন্ডল গ্রামে। খোঁজ করা হয়- দাঁতমন্ড নূর উদ্দিন পির মাজারের বর্তমান খলিফা ও উপজেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের নেতা পীর মুফতি আলাউদ্দিনকে। তার বাড়িতে গিয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু এসময় আলাউদ্দিন ঘরে ছিলেন না। পুরা গ্রামে এই পীরের নেতৃস্থানীয় অনুসারীদের তন্ন তন্ন করে খোঁজ করা হয়। এসময় গ্রেপ্তার করা হয় দুজনকে।
অন্যদিকে, কথিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত, যাদের মূল পরিচয় হেফাজতে ইসলাম, তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের চেয়ে কিছুটা কম ঝুঁকিতে আছেন গ্রেপ্তারের। তাদের নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই বাড়িতে অবস্থান করছেন দিনরাত। কিন্তু আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই বাড়ি ছাড়া। আর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের যারা হিন্দুদের জানমাল রক্ষায় অংশ নেন বলে দাবি করা হচ্ছে- তারা বর্তমানে প্রকাশ্যে থাকলেও প্রশাসনিক ঝামেলার আশঙ্কায় চুপসে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে জন্ম নিয়েছে চাপা ক্ষোভ, হতাশা।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মুখপাত্র ও উপজেলা ইসলামী ঐক্য জোটের সভাপতি মওলানা মহীউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের লোকজন কেউ হামলায় অংশ নেননি। তারপরও গ্রেপ্তার আতংকে আমরাও আছি।

এদিকে, নাসিরনগরে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া সর্বদলীয় সুধী সমাবেশে আইজিপি একেএম শহীদুল হক ওই দুটি ইসলামি সংগঠনের উদ্দেশে বলেছিলেন, রসরাজকে অপরাধের দায়ে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তারপরও কেন সমাবেশ করতে হবে। সমাবেশ করছেন ভাল কথা, কিন্তু আপনারা লোকজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি, সমাবেশ থেকে বহু মানুষ হামলায় অংশ নেন। এ দায় এড়াতে পারেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ছাড়া নাসিরনগরে আরও ১০টিরও বেশি ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের অস্তিত্ব রয়েছে- এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে- জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্য জোট, ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফতে মজলিশ, খতমে নবুয়্যত বাংলাদেশ, এমনকি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের ঘাঁটিও আছে। এসব ছাড়াও পাড়া-মহল্লা, পেশাভিত্তিক আরও ৩০০’র-ও বেশি সংগঠনের অস্তিত্ব আছে।

এসবের নেতা, ব্যাপক পরিচিত কর্মীরা এখন আছেন গ্রেপ্তার আতঙ্কে।

স্থানীয় প্রশাসনের পদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, হামলার জনক হিসেবে ইসলামী সংগঠনগুলোর যথেষ্ট স্বক্রিয়তা ছিল। তাই তারা কোনো ভাবেই দায় এড়াতে পারে না। প্রশাসন তাদের ছাড়বে না। এখানে কোনো কিছু বিবেচনায় এনে বা কারও কোনো তদবির আমলে নেয়া হবে না।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ