আওয়ার ইসলাম: স্ত্রীকে নিয়ে মুমূর্ষু কন্যাকে দেখতে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলেন সিলেটের মাশুক মিয়া।
হাসপাতালের 'হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে' চিকিৎসাধীন খাদিজার কাছে গিয়ে মি. মিয়া মেয়ের উদ্দেশ্যে বললেন, 'কিগো মা, চিনছো নাকি আমাকে'?
জবাবে খাদিজা বললেন, "হ্যাঁ চিনছি"
মাশুক মিয়া ফের শুধান, "আমি কে বলো চাইন?"
খাদিজার জবাব, "আব্বু"।
খাদিজার মা-ও ছিলেন মি. মিয়ার সঙ্গে। কিন্তু তাকে চিনতে পারেননি খাদিজা।
তাকে খাদিজা 'আন্টি' বলে সম্বোধন করেন।
অবশ্য এতে দুঃখিত নন খাদিজার মা কিংবা বাবা। তাদের মেয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন, এতেই স্বস্তি। মাকে 'আন্টি' ডাকায় হেসে ফেলেন মাশুক মিয়া।
গণমাধ্যমকে মি. মিয়া বলেন, তার মেয়ে এখন কথাবার্তা বললেও সেগুলোর বেশীরভাগই অসংলগ্ন। "তার তো ব্রেইন ঠিক নেই। একসময় ভালো কয়, একসময় উল্টা কয়"। এর আগে ডাক্তারদের কথাবার্তায় তো খাদিজা কবে কথা বলবে, কবে সবাইকে চিনবে, এমন কোন আশাই পাওয়া যায়নি।একসময় খাদিজার বাঁচবে সেই আশাই ছিল না ডাক্তারদের কণ্ঠে।
প্রেমে প্রত্যাখ্যান করায় সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম গত ৩রা অক্টোবর তাকে চাপাতি দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। তার মাথায় একাধিক আঘাত লাগে এবং অন্তত একটি আঘাত খুলি ভেদ করে মস্তিষ্কে গিয়ে লাগে। ৪ঠা অক্টোবর খাদিজাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। সেখানে একটি অস্ত্রোপচারের পর তাকে 'লাইফ সাপোর্ট' দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়।প্রথম প্রথম তার বেঁচে থাকা নিয়ে তেমন আশা না থাকলেও ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি হয়। ১৫ই অক্টোবর তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়ে হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। অ
বশ্য খাদিজার বাম হাত ও বাম পা এখনো অবশ। এগুলোতে ব্যান্ডেজ করা। তার হাতে একটি বড়সড় ক্ষত আছে। তাতে গত ১৭ই অক্টোবর একটি অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকেরা। ২-৩ সপ্তাহ পর তার হাতে আরো একটি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকেরা।
তবে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে মাশুক মিয়া বলছেন, তার মেয়ের মৃত্যুর আশঙ্কা আপাতত কেটে গিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
এফএফ