আওয়ার ইসলাম: ভারতের পশ্চিম বাংলার সোন্ডালিয়া স্টেশনে ঈদের দিন গোমাংস নিয়ে ট্রেনে ওঠায় ৩ শিশু ও ৪ নারীকে চলন্ত ট্রেন থেকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই আরপিএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই শিশুসহ সাত জন।
ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষী রেল পুলিশদের শাস্তির দাবিতে সোন্ডালিয়া স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করে ঘন্টা দু’য়েক ধরে বিক্ষোভ পালন করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্বরেলের বারাসত-হাসনাবাদ শাখার সোন্ডালিয়া স্টেশনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সোন্ডালিয়া গ্রামে কোরবানির মাংস আনতে গিয়েছিলেন হাড়োয়া এলাকার চারজন মহিলা। তাদের সঙ্গে তিনটি বাচ্চাও ছিল। মাংস নিয়ে সন্ধ্যা সাতটা পনেরো মিনিটের ট্রেনে চড়ে হাড়োয়ায় ফিরছিলেন তারা। সকলেই একটি মহিলা কামরায় উঠেছিলেন।
সে সময় কর্তব্যরত দুই রেল পুলিশ মহিলাদের প্যাকেটে কী আছে, তা জানতে চান। প্যাকেট খুলে পরীক্ষাও করেন তারা।
অভিযোগ, প্যাকেটের মধ্যে গোমাংস দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রেল পুলিশের কর্মীরা। জোর করে তাদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু ওই মহিলারা ট্রেন থেকে নামতে অস্বীকার করেন। এরপর এক রেল পুলিশ মঞ্জিলা বিবি, হাসিনা বিবি, মনোয়ারা বিবি এবং রেহানা খাতুন নামে এক প্রতিবন্ধী মহিলাকে তাদের সঙ্গে থাকা শিশুসহ চলন্ত ট্রেন থেকে লাথি মেরে প্লাটফর্মে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ।
মঞ্জিলা বিবি নামে এক মহিলার কোল থেকে পাঁচ বছরের এক শিশু ছিটকে পড়ে যায়। তার মাথায় আঘাত লেগেছে। এছাড়া আরো দুই শিশু এবং তিনজন মহিলা কমবেশি আঘাত পেয়েছেন বলে জানা যায়। তাদের স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়ায় স্টেশন চত্বরে। ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত রেল পুলিশকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রাত আটটা দশে ডাউন হাসনাবাদ লোকাল স্টেশন আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় ঘন্টা দু’য়েক ধরে চলে বিক্ষোভ। বন্ধ হয়ে যায় রেল চলাচল। নাকাল হন যাত্রীরা।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় প্রশাসন এবং দেগঙ্গা থানার পুলিশ।
পরে ঘটনাস্থলে আসেন রেল পুলিশের কর্মকর্তারা। অবশেষে দোষী রেল পুলিশদের গ্রেপ্তারের লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে রাত দশটা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়।
জিআরপি’র বারাসত থানার ওসি দীপক কুমার পাইক জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে।