[caption id="attachment_10545" align="alignleft" width="485"] ছবি : মোস্তফা ওয়াদুদ[/caption]
দিদার শফিক: কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের উদ্যোগে সদরঘাট টু জয়দেবপুর দীর্ঘ ৪০ কি.মি. ঢাকা মহানগরীর কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত একঘন্টাব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মানববন্ধন করেছে।
জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল মুফতি মাহফুজুল হকের সঞ্চালনে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমির সভাপতিত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির ভাষণে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমি বলেন, ‘ইসলামের সাথে সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই। আলেমরা কোরআন-হাদিসের শিক্ষা দেয়। এ শিক্ষা শান্তি-সম্প্রীতির শিক্ষা। এর সাথে সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই। ইসলামের উপর বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে এটা সা¤্রাজ্যবাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন বা তাদের শক্তিকে জোরদার করার প্রচেষ্টা । যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে জড়িত তারা এদের দোসর। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস দমনের আহ্বান জানিয়ে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, সুস্থ মানসিকতা ছাড়া সন্ত্রাসবাদ নির্মৃুল করা সম্ভব নয়। সুস্থ চেতনা ও মানসিকতা তৈরির জন্য ইসলামি শিক্ষার বিকল্প নেই। সন্ত্রাস দমন করতে হলে শিক্ষার সর্বক্ষেত্রে ইসলামি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।’
শাইখুল হাদিস আল্লামা আশরাফ আলী বলেন, ‘নবি সা. সারা বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরিত হয়েছেন। তার আনীত ধর্ম ইসলাম সন্ত্রাস দমন করে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়। কওমি মাদ্রাসার সাথে সন্ত্রাস ও জঙ্গির কোন সম্পর্ক নেই। ধর্মীয় শিক্ষার অভাবে চরিত্রহীনরাই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে জড়িত।’
বেফাক মহাসচিব আল্লামা আ. জব্বার জাহানাবাদী বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ধর্মীয় শিক্ষা সকল স্তরের মুসলমান ও জনগণের কাছে পৌঁছে দিলে এদেশে সন্ত্রাস জায়গা পাবে না।’
মুফতি ফয়জুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, ‘যারা জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, যারা দুনিয়ার কোন নৈরাজ্যে লিপ্ত, তারা ইসলামের দুশমন, আল্লাহ ও তার রাসুলের দুশমন, শান্তিপ্রিয় সকল মানুষের দুশমন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, যারা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদে লিপ্ত, তারা তথাকথিত শিক্ষিত, কিন্তু আসলে তারা মূর্খ। এ মূর্খতার ফলেই জঙ্গিবাদ চর্চিত হচ্ছে। শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলাম ধর্মের শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ সমূলে উৎপাটিত হবে।’
শাইখুল হাদিস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘ইসলামের সম্মান-মর্যাদা ও শান্তিপ্রিয়তার ইমেজ ক্ষুন্ন করার জন্যই শোলাকিয়া ও গুলশানের জঙ্গি হামলা হয়েছে। এসব হামলার পেছনে সরাসরি ইহুদিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ জড়িত। দেশের আলেমসমাজ মাতৃভূমির সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষায় অতন্দ্রপ্রহরীর মতো কাজ করে যাচ্ছে। কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্র কেউ জঙ্গিবাদে জড়িত নেই। বিভিন্ন ঘটনায় এ কথা এখন স্পষ্ট।’
[caption id="attachment_10556" align="alignnone" width="816"] ছবি : মোস্তফা ওয়াদুদ[/caption]
মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, ‘যারা ইসলামের নামে বোমাবাজি করে , আল্লাহু আকবার বলে তথাকথিত জঙ্গিহামলা করে , তারা ইসলামের শত্রু, মানবতার শত্রু। যারা শোলাকিয়ায়, গুলশানে আক্রমণ করেছে তারা কেউ মাদ্রাসাছাত্র নয়। তার পরেও আলেম-ওলামার কণ্ঠরোধ কেন? মসজিদের খুৎবা নিয়ন্ত্রণ কেন? এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, কোন কোন মন্ত্রী বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করে দিবে’ এটা চরম নির্বুদ্ধিতা ছাড়া আর কি! সন্ত্রাসদমন করতে হলে সন্ত্রাসের প্রজননকেন্দ্র চিনতে হবে। কওমিমাদ্রাসায় সন্ত্রাস তৈরি হয় না এটা এখন আর বলতে হয় না। জনগণ জানে।’
হাফেজ্জি হুজুরের ছেলে মাওলানা আতাউল্লাহ বলেন, ‘পবিত্র কোরআনে আছে, “নামাজ অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে” কাজেই সন্ত্রাস এর মত একটি ঘৃণিত কাজ থেকে দেশ ও জাতিকে নিরাপত ও মুক্ত রাকতে হলে সরকারকে কোরআনের দেখানো পথে হাটতে হবে। নামাজের শান্তিপ্রিয় পরিবেশ তৈরি করতে হবে । নামাজ-মসজিদ-খুৎবার বিরোধিতা করে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমন করা যাবে না। একথা মাথায় রাখতে হবে, মসজিদ-মাদ্রাসা সন্ত্রাস নির্মুলে সবসময়ই সচেষ্ট ও কার্যকর ভূমিকা রাখে।’
এফএফ