আওয়ার ইসলাম: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সংক্ষিপ্ত এক সফরে আজ সকাল দশটার দিকে বাংলাদেশের ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। প্রায় নয় ঘন্টার সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাথে তার সাক্ষাতের একটি সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও তা এখনো নিশ্চিত নয়।
এই প্রথম বাংলাদেশ সফরে আসলেন জন কেরি, বিকেল সাড়ে ছয়টার পর তাঁর ভারতের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে। বাংলাদেশে জন কেরির এই সফর আসলে কতটা তাৎপর্য বহন করছে?
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার এবং রাজনীতির অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলছিলেন এই সফরে নিরাপত্তার প্রসঙ্গটা গুরুত্ব পাবে মনে হচ্ছে।
“আর যেহেতু জন কেরি ভারত সফরে যাবেন এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত স্ট্র্যাটেজিক ডায়লগে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ থাকবে। কারণ বাংলাদেশের নিরাপত্তার বিষয়টা ভারতের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং সেখানে আলোচনার আগে মি: কেরি বাংলাদেশের কাছ থেকেও পটভূমিটা বুঝতে চাইবেন বলে আমার ধারণা। ফলে নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা অনিবার্যভাবেই হবে বলে মনে হচ্ছে”-বিবিসিকে বলেন আলী রিয়াজ।
মি: রিয়াজ আরও উল্লেখ করছিলেন, গণতন্ত্র, উন্নয়ন, নিরাপত্তা, মানবাধিকার পরিস্থিতি-এটা চারটা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
“কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খানিকটা আপত্তি রয়েছে। আর দেশের ভেতরে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তা নিয়ে একধরনের অস্বস্তি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। আমার মনে হয় এ অস্বস্তির প্রসঙ্গ উঠবে আমার মনে হয়। তবে কিভাবে উঠবে সেটা নির্ভর করবে যার সাথে আলাপ করছেন সেটার ওপর”- বলছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার এবং রাজনীতির অধ্যাপক আলী রিয়াজ।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক টানাপোড়েনের কথা উল্লেখ করা হলেও এখন দুদেশের সম্পর্ক তুলনামুলক ভালো বলে মনে করেন মি: রিয়াজ।
সম্পর্কের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে আলী রিয়াজ বলেন যুক্তরাষ্ট্রের যে ‘কাউন্টার টেরোরিজম পার্টনারশিপ ফান্ড’ সেটাতে বাংলাদেশ এ বছর যুক্ত হয়েছে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকলেও, বিভিন্ন চুক্তি হয়েছে ও বাণিজ্য সম্পর্কে উন্নতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক রিয়াজ।
“ছয় মিলিয়ন ডলারের মতো বাণিজ্য সম্পর্ক দুদেশে। তবে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণতন্ত্রের বিষয়ে প্রশ্ন আছে, আর এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
টানাপোড়েনের যে বক্তব্যটা দেয়া হয় তা অনেকটা রাজনৈতিক এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে এ ধরনের বক্তব্য দেয়া হয় বলে আমার ধারণা”-বলেন আলী রিয়াজ।
আলাপকালে মি: রিয়াজ বলেন, সহযোগিতার সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কে উন্নতি চায় যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র চায় নিরাপত্তা প্রশ্ন ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে।
নিরাপত্তা ইস্যুতে যু্ক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে গুরত্বপূর্ণই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সূত্র: বিবিসি বাংলা