আওয়ার ইসলাম: জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব পদে প্রার্থী বাছাইয়ের অত্যন্ত গোপন ভোট কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ফাঁস হয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টুইটারে পাওয়া যাচ্ছে এই ভোটের ফলাফল। গত শুক্রবার এই ভোট অনুষ্ঠিত হয়।
এই খবর প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট।
মহাসচিব নির্বাচনের এই বাছাইপর্বের গোপন ভোটে অংশ নেয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী ও ১০টি অস্থায়ী সদস্যের ভোটের ভিত্তিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের ‘পছন্দক্রম’ নির্ধারণ করা হয়।
ফাঁস হওয়া ফলাফলে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন পর্তুগালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আন্তনিও গুতিরেস। ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে তিনি বেশ এগিয়ে আছেন।
‘এনকারেজ’, ‘ডিসকারেজ’ ও ‘ওপিনিওন’ এই তিন ক্যাটাগরিতে ভোট দেয়া যায়। গুতিরেস ‘এনকারেজ’ ভোট পেয়েছেন ১১টি। আর বাকি দু্ ক্যাটাগরিতে দুটি করে ভোট পড়েছে।
তবে ফলাফল দেখে মনে হচ্ছে, বান কি মুনের পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে এক জনকে বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতাধর দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া সমমনা হওয়ার কাছাকাছিও আসতে পারেনি।
এই ফলাফল দেখে প্রার্থী আছে কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদে প্রতিনিধিত্ব নেই এমন দেশগুলো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বলে কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ইনডিপেনডেন্ট।
দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনীতিক বান কি মুন দুই দফায় দায়িত্ব পালন করছেন। এ বছরের শেষ নাগাদ তিনি বিদায় নেবেন।
তার স্থলাভিষিক্ত হতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্যই নিরাপত্তা পরিষদ দ্বিতীয় দফার এই ভোট। গত মাসে (জুলাই) প্রথম গোপন ভোট হয়েছে। কিন্তু সেটার ফল ফাঁস হয়নি বলে জানাও যায়নি!
১৯৯৫ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন গুতিরেস। ২০০৫ সাল থেকে সাড়ে ১০ বছর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন।
গুতিরেজের পর স্থান করে নিয়েছেন সার্বীয় কূটনীতিক ভক জেরেমি। নারী প্রার্থীদের মধ্যে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুজানা মালকোরা দ্বিতীয় দফার ভোটে তৃতীয় হয়েছেন।
রাশিয়ার সমর্থিত বুলগেরিয়ার প্রার্থী ইরিনা বোকোভা হয়েছেন পঞ্চম। জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব পদে ইউনেস্কোর বর্তমান মহাপরিচালক ইরিনা অনেকখানি এগিয়ে ছিলেন বলে মনে করা হতো।
গুতিরেস সবার চেয়ে এগিয়ে থাকলেও তিনিই যে পরবর্তী মহাসচিব এমনটা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ দুটি ভোট তার বিপক্ষে এবং দুটি ভোট পড়েছে ‘নো ওপিনিওন’ ক্যাটাগরিতে।
এখন বিপক্ষে ভোট দুটি যদি ভেটো ক্ষমতা সম্পন্ন কোনো দেশের হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে গুতিরেসের মহাসচিব হওয়ার সম্ভাবনা ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে।
এই ভোটের ফলাফলে আরেকটি বিষয় উঠে এসেছে সেটি হলো: সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর দুই দেশের মধ্যে এই ব্যবধান জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা নির্বাচনে নিরাপত্তা পরিষদের ‘একক সিদ্ধান্ত’ নেয়ার ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
এছাড়া রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টিও এখানে উঠে এসেছে।
ফলে অক্টোবরের মধ্যে একক প্রার্থীর ব্যাপারে পরিষদ একমত হতে পারবে কি না তা নিয়েও সংশয় দেখো দিয়েছে।
সূত্র: বাংলামেইল
এইচএ