আওয়ার ইসলাম: ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক নির্ধারিত খুতবা পাঠকে কেন্দ্র করে আবারো এক ইমাম গ্রেফতার হয়েছেন। মাওলানা মোহাম্মদ বেলাল নামের ওই ইমাম বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার বাউশিয়া জামে মসজিদে ইমামতি করেন।
তিনি হিজলা উপজেলার বাউশিয়া জামে মসজিদে ইমামতি করতেন বেলাল।
গুলশানের হলি আর্টিজান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর জঙ্গিবিরোধী সচেতনতা তৈরির অংশ হিসেবে মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজে জঙ্গিবিরোধী খুতবা পড়ার আহ্বান জানায় ইসলামি ফাউন্ডেশন। গত ১৫ জুলাই জুমার নামাজের জন্য একটি খুতবা নির্দিষ্টও করে দেয় ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
পরে এ নিয়ে বিতর্ক উঠলে ফাউন্ডেশন জানায়, তাদের নির্দেশিত খুতবা পড়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে এই বক্তব্যের বিপরীত বক্তব্যও দিয়েছেন সরকারি দলের উচ্চপদস্ত নেতা। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, ইফা নির্ধারিত খুতবা না পড়লে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে একই বিষয়ে জাতীয় সংসদে ২৭ জুলাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খুতবা নির্ধারিত করে দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কুরআন ও হাদিসসমূহের উক্তিগুলো নিয়ে একটা ছোট পুস্তিকা দেওয়া হয়েছে।
প্রসাশনের দু‘রকম বক্তৃতায় দোটায় পড়েছে দেশের ইমাম খতিবগণ। তারা ইফা নির্ধারিত ওই খুতবা পড়বেন কিনা এ নিয়েও সংশয়ে আছেন। কিন্তু এর মধ্যেই তিনজন ইমামকে গ্রেফতার করা হলো।
২৩ জুলাই নির্ধারিত খুতবা না পড়ায় গ্রেফতার করা হয় নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের বানদত্ত বাজার জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ বেলাল হোসেন । পরদিন একই অপরাধে গ্রেফতার হন নাটোরের নলডাঙ্গা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ফজলুর রহমান।
বাউশিয়া জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ বেলাল ইসলামি ফাউন্ডেশন নির্দেশিত খুতবা না পড়ায় প্রতিবাদ জানায় মুসল্লিদের একটি অংশ। জনাব বেলাল তাদের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা তাকে জঙ্গিদের সমর্থক আখ্যা দিয়ে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে আটক করে।
জানতে চাইলে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদুজ্জামান জানান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মসজিদে খুতবা নিয়ে মুসল্লিদের সঙ্গে ইমামের ঝামেলা হয়। এতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। আর আমরা ইমামকে নিয়ে এসেছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’
খুতবা নির্ধারণের বিষয়টি নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে আসছে ইসলামি দলগুলো। ২৯ জুলাই সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম। তবে বিশেষ কারণ দেখিয়ে ২৮ জুলাই নির্ধারিত অনুষ্ঠান স্থগিতের ঘোষণা দেয় দলটি।
আরআর