আওয়ার ইসলাম: ১৪ বছর বয়সী তুর্কি কিশোরী আদবিয়ি গুল ইসমাইলুগলু। তুরস্কের অভ্যুত্থান ঠেকাতে জান বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিলেন। সম্প্রতি দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই কিশোরী বলেন, ‘তুরস্কে ফের অভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হলে আবারো রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করব। আমি আমার প্রিয় স্বদেশ ও আমার প্রিয় ইসলাম ধর্মের জন্য যুদ্ধ করব এবং আমি এতে ভীত হব না। তারা দেখেছে তুর্কিরা ভয়ে পালিয়ে যায় না।’
গুল বলেন, সেদিন তিনি ইস্তানবুলের মেট্রোপলিটন ভবনের সামনের রাস্তায় সৈন্যদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন। বুলেট তার বাহুকে বিদ্ধ করে পিঠের দিকে দিয়ে বেরিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘টিভিতে এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা দৃশ্য দেখা মাত্রই আমি অবাক হয়ে যাই। আমাদের কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে তা আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না।’
‘এ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা দমন করতে তুর্কি নাগরিকদের রাস্তায় নেমে আসার জন্য প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান আহ্বান জানালে আমি তৎক্ষনাৎ তাদের প্রতিরোধ করতে রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নেই।’
‘আমার সঙ্গে আমার মা, বাবা এবং বোনও বেরিয়ে আসে। প্রধমে আমরা ইস্তাম্বুলের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা করলাম, কিন্তু অভ্যুত্থান চেষ্টাকারী সৈন্যরা ব্যারিকেড দেয়ায় আমরা সেখানে যেতে ব্যর্থ হই।’
তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের পায়ের দিকে গুলি ছুঁড়ার পূর্বে একজন সৈনিক প্রথমে আকাশের দিকে গুলি ছুঁড়তে তাকে। পরে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে সৈন্যরা সরাসরি তাদের দিকে গুলি ছুঁড়ে।’
গুল বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম যে, তারা আমাদেরই সৈনিক এবং তারা আমাদের গুলি করবে না। তারপরেও তারা যদি আমাদের গুলি করে আমরাও প্রস্তুত ছিলাম শহীদ হওয়ার জন্য এবং আমাকে ঠিক ওই মুহূর্তেই সৈন্যরা গুলি করে। আমার বাহুতে গুলি লাগার পর আমি কিছুটা বিস্মিত হয়ে যাই। আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, তারা সত্যি আমাদের গুলি করতে পারে।’
‘কিন্তু পরক্ষণেই আমি স্বস্তিবোধ করি এই ভেবে যে, আমি দেশের জন্য শহীদ হতে যাচ্ছি। প্রথমত আমি ভেবেছিলাম যে, এটা একটা প্লাস্টিক বুলেট ছিল কিন্তু আসলে এটা তা ছিল না।’
গুল জানান, তিনি দেশপ্রেমের শিক্ষা নিয়ে বড় হয়েছে এবং ফের একই ধরনের ঘটনা ঘটলে আবারো রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
গত ১৫ জুলাই রাতের এই অভ্যুত্থান চেষ্টার ঘটনায় অন্তত ২৬৫ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ১৬১ জন গণতন্ত্রপন্থী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক। নিহত বাকিরা অভ্যুত্থানকারী। আহত হয়েছেন ২ হাজার ১০০ জন।
আরআর