ঢাকা: জার্মানির মিউনিখে হামলাকারীরর পরিচয় পাওয়া গেছে। প্রথমে তাকে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত মনে করা হলেও সে আসলে উগ্রবাদী খৃস্টান। পুলিশ তাকে চিহ্নিত করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে। এমন কী তার বাসায় অভিযান চালিয়ে ‘ছাত্ররা কেন হত্যা করে’ এই শিরোনামে একটি নিবন্ধসহ কিছু বই এবং কাগজপত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশের ধারণা সে নরওয়ের উগ্র খ্রিস্টান ডানপন্থি ব্রেইভিকের অনুসারী হতে পারে।
২০১১ সালের ২২ জুলাই নরওয়ের উগ্র খ্রিস্টান ডানপন্থি ব্রেইভিক ৭৭ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করেছিল গুলি চালিয়ে। তার ঠিক পাঁচ বছর পর একই দিনে জার্মানিতে ঘটলো একই ধরনের ঘটনা। পুলিশ ধারণা করছে শুক্রবারের মিউনিখের হামলাকারী ব্রেইভিকের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকতে পারে।
শুক্রবার ২২ জুলাই সন্ধ্যায় জার্মানির মিউনিখ শহরের অলিম্পিয়া শপিংমলে ১৮ বছর বয়সী ইরানি বংশোদ্ভূত জার্মান এক তরুণ এ হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়। আহত রয়েছেন আরো অনেকে যার মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই তরুণের জার্মানি ও ইরান দুদেশেরই পাসপোর্ট ছিল। তবে তার নাম আলি ডেভিড সনবলি।
পুলিশ বলছে, গুলি চালানোর আগে ওই তরুণ কিছু একটা বলে চিৎকার করছিল, কিন্তু তদন্তকারীরা এখনও পর্যন্ত বের করতে পারেনি ওই তরুণ আসলে কী বলেছিল।
তবে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওতে ‘আমি জার্মান’ কথাটি কাউকে বলতে শোনা গেছে। আর এর পরই এমন ধারণা জোরালো হয়েছে যে উগ্র ডানপন্থি মতাদর্শের কোনো সমর্থক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।
পুলিশ বলছে, নরওয়ের গণহত্যাকারী অ্যান্ডারস বেহরিং ব্রেভিক ২০১১ সালের ২২ জুলাই ৭৭ জনকে হত্যা করেছিল, তার সঙ্গে এই তরুণের যোগাযোগের প্রমাণও তারা পেয়েছে।
ব্রেইভিক নরওয়ের রাজধানী অসলোতে বোমা মেরে আট জন এবং উটোয়া আইল্যান্ডে মধ্যবামপন্থি দলের গ্রীষ্মকালীন যুবসম্মেলনে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৬৯ জনকে নির্বিচারে হত্যা করে। বর্তমানে তার বয়স ৩৭ বছর। ২০১২ সালে নরওয়ে আদালত তার ২১ বছরের সাজা দেন। সে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
ব্রেইভিক উগ্র ডানপন্থায় বিশ্বাসী ছিল এবং তার ভাষ্যমতে, ইউরোপে মুসলিমদের অভিবাসন ঠেকানোই ছিল তার উদ্দেশ্য। পুলিশ মনে করছে, মিউনিখ হামলাকারী ওই তরুণ নরওয়ে গণহত্যার বার্ষিকীর দিনটি বেছে নেয়ার কারণ সে ব্রেইভিকের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকতে পারে।
সন্দেহভাজন হামলাকারী। তদন্তকারী পুলিশের সন্দেহ, একজন মেয়ের ছদ্মনামে ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে খুন করার জন্য লোকজনকে ম্যাকডোনাল্ড-এর দোকানে ডেকে এনেছিল হামলাকারী।
আরআর