ঢাকা: ঢাকার পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় আরেকটি বাসার সন্ধান মিলেছে, যেখানে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার আগে জঙ্গিরা অবস্থান করেছিল বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, ৪৪১/৮ পশ্চিম শেওড়াপাড়ার ওই বাসার মালিককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
“বাড়ির মালিকের নাম নুরুল ইসলাম। সেখানে পুলিশ জঙ্গিদের ব্যবহৃত হাতে তৈরি গ্রেনেড, কালো রঙের পোশাক ও কিছু সরঞ্জাম পেয়েছে।”
ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ না করা এবং তথ্য গোপন করার অভিযোগে বাড়ির মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
গোয়েন্দা শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, শনিবার রাতেই ওই বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়।
ওই অভিযানের আগে শনিবার বিকালে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ি থেকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য গিয়াস উদ্দিন আহসানসহ তিনজনকে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন- গিয়াস উদ্দিনের ভাগনে আলম চৌধুরী এবং বসুন্ধরার ওই ভবনের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান তুহিন।
পুলিশ বলছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ৬ নম্বর সড়কের ব্লক ই-এর ৩০১/এ প্লটের টেনেমেন্ট-৩ এর এ/৬ নম্বর ফ্ল্যাটে গুলশানে হামলাকারীরা পাঁচ জঙ্গি মিলিত হয়েছিলেন।
ওই বাসা থেকে বালুভর্তি কার্টন, জঙ্গিদের কাপড়সহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়েছে জানিয়ে উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান শনিবার রাতে বলেছিলেন, বালুভর্তি ওই কার্টনে হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেড রাখা হয়েছিল বলে তারা ধারণা করছেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব হেলথ অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সেসের ডিন গিয়াস উদ্দিন আহসান বসুন্ধরার ওই ফ্ল্যাটের মালিক। ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন তার ভাগনে আলম ও ভবনের ব্যবস্থাপক তুহিন।
পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ বলেন, জঙ্গিদের জন্য গত মে মাসে ফ্ল্যাটটি ভাড়া করেছিলেন তাদের সহযোগী সদস্যরা। গুলশানের সন্ত্রাসী হামলার পর তারা দ্রুত ওই বাসা ছেড়ে পালিয়ে যান।
গত ১ জুলাই রাতে গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিজান বেকারিতে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে দেশি-বিদেশি অন্তত ৩৩ জনকে জিম্মি করে একদল অস্ত্রধারী। পরদিন সকালে কমান্ডো অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনী ওই ক্যাফের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
পরে সেখান থেকে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। অভিযানে নিহত হন পাঁচ হামলাকারী।
এর আগে রাতে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে জঙ্গিদের ছোড়া বোমায় পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন।