শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


আরবদের চেয়ে জন্মহার বাড়ছে ইসরায়েলের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

arab.israeli.flag-1ডেস্ক রিপোর্ট: ইসরায়েলের সামরিক বাজেট বৃদ্ধি এবং আবর-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে দ্বিজাতি তত্ত্বের পক্ষে সব সময়ই জন্মহারের যুক্তি দেখিয়ে থাকে ইসরায়েলি বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা। তাদের যুক্তি, আরবদের পরিবারে সন্তান সংখ্যা বেশি হয়। তাই ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংহত না করলে ইহুদি জনগোষ্ঠীর অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গদের মতো হবে। আরবদের বিপরীতে তারা সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে।

নব্বইয়ের দশকে যখন নরওয়ের অসলোতে আরব-ইসরায়েল শান্তি আলোচনা হয় তখন যুক্তিটি সত্য মনে হয়েছিল। তখন ইসরায়েলি নারীদের গড় প্রজনন হার ছিল ২ দশমিক ৬। বিপরীতে ইসরায়েল ও পূর্ব জেরুজালেমের মুসলিম নারীদের প্রজনন হার ছিল ৪ দশমিক ৭। পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকার মুসলিম নারীরা প্রত্যেকে গড়ে ছয়জন সন্তানের মা হতেন। ফিলিস্তিনের প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফাত একবার তাই গর্ব করে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি নারীদের গর্ভ হচ্ছে আমাদের জনগণের সবচেয়ে বড় অস্ত্র।

কিন্তু গত এক দশকে পাল্টে গেছে সেই চিত্র। ইসরায়েল অধিকৃত ভূখণ্ডে এ সময়ে সংঘটিত হয়েছে এক জনমিতিক বিপ্লব। ইসরায়েলে ইহুদি প্রজনন হার বেড়েছে, অন্যদিকে ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে আরব প্রজনন হার কমেছে। ইসরায়েলের এই জনসংখ্যা বিস্ফোরণ দেশটির জনগণের সাহসও বাড়িয়েছে। তারা এখন আর আরবদের বিপরীতে সংখ্যালঘু হওয়ার ভয়ে ভীত নন।

ইসরায়েলি পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ইহুদি নারীদের গড় প্রজনন হার ছিল ৩ দশমিক ১১। একই সময় ইসরায়েলের আরব নাগরিক ও পূর্ব জেরুজালেমের অধিবাসী নারীদের গড় প্রজনন হার ছিল ৩ দশমিক ১৭।

ইসরায়েলে ইহুদি-আরব প্রজনন পার্থক্য কমার পাশাপাশি কমেছে ফিলিস্তিনি নারীদের প্রজনন হারও। ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, ১৯৯৭ সালে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি নারীদের গড় প্রজনন হার ছিল ৫ দশমিক ৬, যা এখন ৩ দশমিক ৭-এ নেমে এসেছে। গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি নারীদের গড় প্রজনন হার ছিল ৬ দশমিক ৯, এখন তা কমে হয়েছে ৪ দশমিক ৫।

ইসরায়েলের রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী আবিদর লিবারম্যান তাই এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘জনমিতিক বোমা বলে কিছু থাকবে না। আরব ও ইহুদিদের জন্মহার মিলে যাবে। পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা থেকে বিপুল সংখ্যক ইহুদি অভিবাসী ইসরায়েলে আসবে।’

তবে ইসরায়েলের প্রধান বিরোধী দল জিওনিস্ট ইউনিয়নের এমপি সেনিয়া সভেতলোভা বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা হলো পৃথক জনগোষ্ঠী। সংখ্যায় যতই হ্রাস পাক, জাতীয় সংগ্রামের লক্ষ্য অর্জনে তাদের লড়াই থামবে না। আগামী ১০০ বছরেও এখানকার দুটি জনগোষ্ঠীর সংঘাত চলতে থাকবে।’

সাধারণত একটি দেশ সচ্ছলতা ও সমৃদ্ধির দিকে গেলে সেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে যায়। কিন্তু গত এক দশকে ইসরায়েলের মাথাপিছু আয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর গড় মাথাপিছু আয়কে ছাড়িয়ে গেলেও সন্তান জন্মের হার তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। উন্নত দেশগুলোর মধ্যে ইসরায়েলে প্রজনন হার এখন সবচেয়ে বেশি। ইসরায়েলি ইহুদি পরিবারগুলোয় সন্তান সংখ্যা এখন মিশরীয়, ইরানি ও লেবাননি পরিবারের চেয়ে বেশি।

/আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ