দিদার শফিক : চলার পথে দোষ-ত্রুটি থাকবেই। কিছু ভুল মানবীয়। কিছু ভুল মার্জনীয়। এ জাতীয় ভুলগুলো মানবিক ও আচরণগত। কিন্তু কিছু ভুল আছে ধর্মীয় বিশ্বাসগত। যার স্থান ধর্মে নেই তাকে ধর্মের আসনে বসিয়ে দেওয়া। যে কাজের অনুমোদন নেই তা ধর্মবিশ্বাসে পালন করা। এ জাতীয় ভুলেঘেরা বিশ্বাসকে বলে কুসংস্কার বা ধর্ম অসমর্থিত সামাজিক রেওয়াজ । এমন কিছু সামাজিক রেওয়াজ সম্পর্কে জেনে নিই । যা নারীদের ঘিরেই সমাজে প্রচলিত।
পায়ে মেহেদি ব্যবহার কি জায়েজ?
মেয়েদের জন্য পায়ে মেহেদি ব্যবহার করার অনুমোদন আছে। এটা তাদের জন্য জায়েয। যারা মনে করেন মেয়েরা পায়ে মেহেদি ব্যবহার করতে পারবে না। এটা ভুল ধারণা।
নবজাতকের কানে না ঘরের বাইরে আজান
নবজাতক ছেলে হোক বা মেয়ে হোক ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দেওয়া নিয়ম। অনেকে মনে করে, মেয়ে সন্তান হলে আজান-ইকামত দিতে হয় না। আবার কেউ মনে করে, ঘরের বাইরে আজান দিতে হয়। এগুলো ভুল ধারণা। সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে আজান-ইকামতের মাধ্যমে তার কানে এ আওয়াজ পৌঁছে দেওয়া হয়, আল্লাহ এক। মুহাম্মদ সা. আল্লাহর রাসুল। নামাজ ও কল্যাণের পথে এসো। আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তাওহিদ ও রেসালাতের দাওয়াত পেয়ে যায় শিশু দুনিয়ায় এসেই। এ সুন্নাত আমলে হেলা করা উচিত নয়।
আঁতুড়ঘর কি চল্লিশ দিন নাপাক থাকে?
প্রসূতি মায়ের কি চল্লিশ দিন নামাজ ইবাদত মাফ? অনেকে মনে করে সন্তানপ্রসব পরবর্তী ৪০ দিন প্রসবগৃহ নাপাক থাকে। আবার অনেকের ধারণা , সন্তানপ্রসব পরবর্তী ৪০ দিন প্রসূতি মায়ের ইবাদত মাফ। নামাজ-রোজা করতে হয় না। উভয় ধারণাই ভুল। সন্তান প্রসব পরবর্তী মহিলাদের রক্তক্ষরণকে নিফাস বলে। এ নিফাস বা রক্তক্ষরণের সর্বোচ্চ সীমা ৪০ দিন। সর্বনিম্নের কোন সীমা নেই। এক মুহূর্ত বা এক ঘণ্টাও হতে পারে। যাদের রক্তক্ষরণ ৪০ দিনের কম হবে তারা চল্লিশ দিনের আগে যে দিন রক্তক্ষরণ বন্ধ হবে সেদিন থেকেই নামাজ-রোজা শুরু করবে। রক্ত নাপাক। ঘরে রক্ত পড়লে মুছে বা ধুয়ে ফেললে ঘর পবিত্র হয়ে যায়। ৪০ দিন ঘর নাপাক থাকার কোন কারণ নেই।
গর্ভবতী নারী চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণের সময় কিছু কাটলে সন্তান কি কানকাটা, ঠোটকাটা হয়?
গর্ভবতী নারী চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণের সময় কিছু কাটলে সন্তান কানকাটা , ঠোটকাটা হওয়া একেবারেই ভুল কথা। এটা সমাজের ভুল ধারণা। সন্তান ঠোটকাটা বা কানকাটা হওয়ার সাথে চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণে কিছু কাটাকাটির সাথে কোন সম্পর্ক নেই।
মহিলাদের জবাইকৃত পশু হালাল নয় কি?
মহিলাদের জবাইকৃত পশু ভক্ষণ হালাল। অনেকে মনে করে, মহিলাদের জবাই করা পশু খাওয়া হারাম। এটা ভুল বিশ্বাস। পুরুষের জবাইকৃত পশু যেমন হালাল তেমনি মহিলার জবাইকৃত পশুও হালাল। প্রয়োজনবশত মহিলারাও জবাই করতে পারে।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর