শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


শুধু বাজার চাহিদা নয়; ইসলামি প্রকাশনীকে প্রয়োজনের বিষয়টিও ভাবতে হবে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুসা আল হাফিজ।।

কিছু বিদেশী বই প্রায়ই অনুবাদের পরও অনুবাদ করানো হয়। অনেক সময় এগুলো হয় অনুবাদের অনুবাদ। বিশেষত ইসলামীধারার প্রকাশনীর বিষয়টা বলতে চাই। ব্যাপারটা কিন্তু এমন নয় যে, এসব বইয়ের বাইরে এরচেয়ে কিংবা এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বই পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাপারটা প্রধানত বাজারচাহিদা। কিন্তু একটি ইসলামী প্রকাশনী যেভাবে বাজার লক্ষ্য করবে, ঠিক সে লক্ষ্য করবে, প্রয়োজনীয়তা, প্রায়োগীকতা। এ বিচারে আরবলেখকদের বই যেমন গুরুত্বপূর্ণ, উপমহাদেশীয় লেখকদের অনেকের গুরুত্ব তাদের চেয়ে কম নয়। নানাক্ষেত্রে বলা চলে বেশি।

যেমন ইদ্রিস কান্ধালবী রহ.। তাঁর রহ. যতগুলো বই ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে, বাংলায় ততগুলো হয় নাই। প্রায় একশত গ্রন্থ তিনি রচনা করেছেন। ২১ বছর বয়সে গ্রন্থ রচনা শুরু করেন। প্রতিদিন লেখতেন। মৃত্যুর ১৫ দিন আগে থামে সেই নিত্যকার রচনাধারা।

গতকাল এসেছিলেন মাকতাবাতুল হাসান ও কালান্তরের দু’জন। তাদেরকে যখন কান্ধালবীর রচনার ব্যাপকতার কথা বললাম , তারা অবাক হলেন। তারা চাইলেন এ বিষয়ে যেন বিস্তারিত বলি। শিবলী নোমানীর রচনার ব্যাপকতার কথা বললাম, তারা অবাক হলেন। চাইলেন বিস্তারিত যেন বলি।

শুধু তারা কেন? মুহাম্মদ আলী মুঙ্গেরী, আশরাফ আলী থানবী, মুহাম্মদ মিয়া, তোফায়েল আহমদ আলিগড়ি, হাকিম আবদুল হাই, সোলায়মান নদবী,মুফতী শফি’ মনজুর নোমানী, মানাযির আহসান গিলানী, আবদুর রশীদ নোমানী রহ. তালেবুল হাশেমী .... কতজনের নাম বলবো? তাদের রচনার খুব অল্পই অনূদিত হয়েছে বাংলায়।

বলছিলাম কান্ধালবীর কথা। তিনি ছিলেন একজন কবি। মুহাদ্দিস ও মুতাকাল্লিম।

কবি! শুনে অবাক হচ্ছেন? তার রয়েছে অনেকগুলো দীপ্তিমান কাব্যগ্রন্থ। যার মধ্যে আছে, ১. তাইয়াতুল কাযা ওয়াল কাদর ২. লামিয়াতুল মি’রাজ ৩. রাইয়াতুল হামদ ওয়াস সানা ৪. তাশতিরু লামইয়াতি ইমরিউল কায়স । কিন্তু তার কাজের মূল জায়গা ছিলো ইসলামী জীবনবোধ ও জীবনাচারের শাস্ত্রীয় এলাকা। সেখানে তার কাজগুলোর মধ্যে আছে

যার মধ্যে আছে, তাফসীর বিষয়ক ৫. আল ফাতহুস সামাবী বি তাওযিহি তাফসিরিল বায়দাবী, (২২ খণ্ড) ৬.মায়ারিফুল কুরআন ৭. মুক্দ্দামাতুত তাফসীর ৮. দালাইলুল কুরআন আলা মাযাহিবিন নুমান, ৯. শারাইতে মুফাসসির ওয়াল মুতারজিম (উর্দু) ১০. ই’জাযুল কুরআন (উর্দু)

হাদীস শাস্ত্রে তাঁর গ্রন্থ - ১১. হাল্লু তারাজিমিল বুখারী, ১২. মুকাদ্দামাতুল হাদীস, ১৩. মুকাদ্দামাতুল হাদীস, ১৪.আততালিকুস সাবীহ (৮ খণ্ড) ১৫. মিনহাতুল হাদীস ১৬.তুহফাতুল ক্বারী ফি হাল্লি মুশকিলাতিল বুখারী. ১৭.মুকাদ্দামাতুল বুখারী. ১৮. আল কালামুল মাওসুক ফি তাহকিকী ইন্না কালামাল্লাহি গায়রিল মাখলুক, ১৯. আল বাকিয়্যাতুস সালিহাত ফি শারহি হাদিসী ইন্নামাল আমালু বিন্নিয়্যাত, ২০. তুহফাতুল ইখওয়ান বি শারহি হাদিসিল ঈমান ২১. আহসানুল কালাম ফি মা ইয়াতাআল্লাকু বিল কিরাআতি খালফাল ইমাম, ২২. যিলাউল আইনাইন ফি তাহকিকি রাফয়িল ইয়াদাইন ২৩. হুজ্জিয়াতে হাদীস. ২৪. কালিমাতুল্লাহ ফি হায়াতি রুহিল্লাহ ২৫. আল কাওলুল মুহকাম ২৬.. লাতাইফুল হিকাম ফি আসরারি নুযুলি ঈসা ইবনে মারইয়াম আ. ২৭.. আদদীনুল কায়্যিম. ২৮. আহসানুল বয়ান ফি মারিফাতিল কুফরি ওয়াল ইমান, ২৯. নিহায়াতুল ইদরাক ফি হাকিকাতিত তাওহিদি ওয়াল ইশরাক ৩০. ফাতহুল গাফুর শারহি মানযুমাতিল কুবূর ৩১. ইসলাম ও মিরজায়িয়্যত কা উসূলি ইখতেলাফ ।

সীরাত ও জীবনী বিষয়ক গ্রন্থ - ৩২ সীরাতে মুস্তফা (চার খণ্ড) ৩৩. খিলাফতে রাশেদাহ।

কালামদর্শনে তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে আছে ৩৩. আকাইদে ইসলাম (উর্দু) ৩৪. উসূলুল ইসলাম ৩৫. ইলমুল কালাম ৩৬. দাওয়াতে ইসলাম ৩৭. ইসবাত সানি ‘আলাম ৩৭. হুদুস, মাদ্দাহ ওয়া রুহ ৩৮. বাশাইরুন নাবিয়্যিন ৩৯. আহসানুল হাদীস ৪০ . মিসকুল খিতাম ৪১. ইসলাম আওর নাসরানিয়্যত ।

ইসলামী জীবন ব্যবস্থার বিবিধ বিষয়ে তার গুরুত্বপূর্ণ বইগুলোর মধ্যে আছে - ৪২. দাসতুরে ইসলাম ৪৩. নিজামে ইসলাম ৪৪. ইসলাম আওর ইশতেরাকিয়্যত ৪৫. আকল : উস কি ফযিলত ৪৬. নবুওত ই কুবরা ৪৭. মাকাসিদে বিসাত ৪৮. শরহে হাদিসে ইফতেরাকে উম্মত ৪৯. মাহাসিনে ইসলাম ৫০. আকল আওর ইসলাম ৫১. শারাইতে নবুওত. ৫২. পায়ামে ইসলাম ৫৩. দাওয়ায়ে মিরজা ৫৪. আওরাদ মুবারাকা ইত্যাদি।

প্রতিটি গ্রন্থ নিজ নিজ বিষয়ে উজ্জ্বল। এতোটাই গুরুত্ববহ যে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গ্রন্থাবলীর মধ্যে তাকে সামনের সারিতে রাখতে হবে। আরবদের বিভিন্ন লেখকের মধ্যে গবেষণার শৃঙ্খলা এবং বর্ণনার ধারাবাহিকতা হয়তো সুন্দর। কিন্তু তাৎপর্যের গভীরতা , সত্যউন্মোচন এবং অন্তর্দৃষ্টি ও আবেদনে দেখা যাবে ইদ্রিসী রচনা অনেক উচ্চমার্গীয়।

অনূদিত বইগুলো বার বার অনুবাদের বদলে এ জাতীয় মূল্যবান রচনাসমূহের প্রতি নজর দিতে পারেন।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ