শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


কল্পনাতীত সংকটে প্রাইভেট মাদরাসাগুলো!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী।।
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>

করোনা ভাইরাস সংক্রমনের এই সময়ে টালমাটাল সারাবিশ্বের অর্থব্যবস্থা। ভেঙে পড়েছে অর্থনৈতিক স্তম্ভগুলো। ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত অচলাবস্থায়। নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া অধিকাংশ প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোর চিত্র প্রায় একই রকম।

বাংলাদেশের অধিকাংশ মাদরাসাগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন বা প্রাইভেট। সংক্রমন এড়াতে বন্ধ করে রাখা হয়েছে এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে বন্ধ হয়ে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়। কিন্তু থেমে নেই ব্যয়।

প্রাইভেট মাদরাসাগুলোর প্রতিষ্ঠাতারা বলছেন, বাড়িভাড়া, কারেন্ট বিল, গ্যাস বিল ও আনুষঙ্গিক খরচের টাকা গুনতে হচ্ছে প্রতিমাসেই। কিন্তু আমাদের সকল প্রকার আয় বন্ধ। শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় না থাকায় অভিভাবকরা বেতন দিচ্ছেন না। এছাড়া নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও নতুন করে ভর্তি হতে অনাগ্রহী। এমন পরিস্থিতি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক জীবনেও সজোরে আঘাত হেনেছে।

সাভারের প্রসিদ্ধ নূরানী প্রতিষ্ঠান নুরুল কুরআন মাদরাসা। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে প্রতি মাসে এক লক্ষ টাকা করে ভাড়া গুনেও ভালো ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুর রহমান। কিন্তু এখন কিছুটা গা ঢাকা দিয়ে চলছেন বাড়িওলার ভয়ে।

তিনি বলেন, গত চার মাস যাবত ভাড়া দিতে পারছিনা। বাড়িওয়ালার কাছে এডভান্সের টাকা রয়েছে। যা আমার ভাড়ার চেয়ে বেশি। কিন্তু তিনি সাময়িক অসুবিধা মেনে নেননি। প্রতিনিয়ত ভাড়ার জন্য প্রেসার দিয়ে যাচ্ছেন। প্রেসার দিয়ে কী হবে? আমরা টাকা কোথায় পাব?

আমরা তো সারা জীবন কোরআন শেখানোর মধ্যে ব্যস্ত ছিলাম। বাড়তি আয়ের উৎস কখনোই ছিল না। এখন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে পারছি না। আবার ভাড়ার টাকাও চালিয়ে নিতে পারছিনা। কিন্তু ভাড়ার প্রেসার ঠিকই নিতে হচ্ছে।

মাদরাসাতুল ইহসানের বর্তমান পরিচালক মুফতি কামরুজ্জামান। তার কাছে বাড়িভাড়া এখন গলার কাটার মত। অসহ্য যন্ত্রণা দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। তিনি জানিয়েছেন, বাড়িওয়ালা আমাকে সেভাবে এখনো প্রেসার দেয়নি। কিন্তু তার সামনে যেতে লজ্জা পাই। মাসের শুরুর দিকে আমি আমার বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করে দিতাম। কারণ তখন আয় ছিল, ব্যয় করতে কোন সমস্যা হতো না। এখন আয় বন্ধ, ব্যয় করব কিভাবে?

সারাদিন মাদরাসায় থাকি। যেন বাড়ির মালিকের সাথে দেখা না হয়। চক্ষুলজ্জার ভয়। যদিও দেখা সাক্ষাৎ হলে তেমন কিছু বলবে না। কিন্তু কয়েকবার বিভিন্ন মাধ্যমে আমার কাছে টাকা চেয়েছে। আমি দিতে পারিনি। সামনে পরিস্থিতি কেমন হবে, এটাও একেবারে অজানা। কী করবো এখন কিছু বুঝতে পারছিনা!

-এ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ