বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


গ্র্যান্ড মুফতির সমস্যা যেখানে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>

মুসলিম সমাজে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। কিছু ব্যক্তি বা সমাজ কেন্দ্রিক। কিছু রাষ্ট্র বা বৈশ্বিক। ইসলাম ধর্ম অনুসারে এ ধরনের জটিল সমস্যাগুলোর সমাধান দিয়ে থাকেন একজন বিজ্ঞ মুফতি।

জাতীয় বিষয়গুলোর সমাধান যেন ওলামায়ে কেরাম সম্মিলিত ভাবে দিতে পারেন এজন্য বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সর্বোচ্চ অথরিটি আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া একটি বোর্ড গঠন করেছে।

কিন্তু গ্র্যান্ড মুফতি নামে কোন পদ রাখা হয়নি ১৪ সদস্যের এ বোর্ডে। বোর্ড বলছে, যেহেতু সমাধানগুলোর সমাধূ কোরআন ও হাদিস কেন্দ্রিক, কোন ব্যক্তির মতামত নির্ভর নয়, এজন্য গ্রান্ড মুফতি নির্বাচন করা অনর্থক।

তাদের মতে কোন ব্যক্তিকেন্দ্রিক বোর্ড গঠন করলে স্বেচ্ছাচারিতা তৈরি হতে পারে। এছাড়াও ক্ষমতায় থাকা লোকদের মর্জি অনুযায়ী ফতোয়া প্রদান করতে হতে পারে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়।

জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদের শাইখুল হাদিস ও আল হাইয়ার ফিকাহ বোর্ডের সিনিয়র সদস্য মুফতি নুরুল আমিন বলেন, মুসলমানের দৈনন্দিন, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় সমস্যাগুলো যেহেতু কোরআন ও হাদিসের দলিল অনুযায়ী সমাধান করতে হয়। তাই সমস্যা সমাধানের জন্য একজন মুফতির প্রয়োজন হয়।

‘বিষয়টি জটিল ও গাঢ় হলে মুফতি বোর্ডের প্রয়োজন হয়। বিজ্ঞ মুফতিগন একসঙ্গে বসে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিতে পারেন। এজন্য আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আলহাইয়া মুফতি বোর্ড গঠন করেছে।’

‘গ্র্যান্ড মুফতির তো কোন প্রয়োজন দেখছি না। আর এ বোর্ড এমন কোন উদ্দেশ্য সামনে রেখেও গঠন করা হয়নি।’ বলছিলেন মুফতি নুরুল ইসলাম।

নাম না প্রকাশের শর্তে বোর্ডের একজন সদস্য জানান, কোন একজন ব্যক্তি সরকার কর্তৃক বা বোর্ড কর্তৃক গ্র্যান্ড মুফতি হোক, আর তিনি জিম্মি হয়ে সরকারের অনুকূলে ফতোয়া প্রদান করুক -এটি আমরা কামনা করি না।

বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ও দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সম্পাদক মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, গ্র্যান্ড মুফতির প্রথাটি আমরা সাধারণত সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে দেখতাম। যেখানে কমিউনিজম বা সোশ্যালিজম চালু ছিল। সেখানকার মুসলিম এলাকাগুলোতে কোন একজন ব্যক্তিকে গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিযুক্ত করা হতো। এছাড়াও যেখানে কঠিন বাদশাহী থাকে সে সমস্ত স্থানেও আমরা দেখতে পাই। এটা হল ট্রেডিশন।

এ দু'রকম স্থানের মুসলমানরা উনাকেই অথরিটি মনে করে। যেহেতু প্রমাণাদি, পরিস্থিতি ও চিন্তার ভিন্নতার কারণে ফতুয়াও ভিন্ন হতে পারে -এজন্য তারা একটি সিদ্ধান্তে আসার জন্য তাদের ছায়া হিসেবে কোন একজনকে গ্রান্ড মুফতি হিসেবে বেছে নেন। যাতে করে ধর্মীয় বিষয়ে রাষ্ট্রের মোকাবেলায় সবাই এক থাকতে পারেন। এছাড়া সেকুলার বা গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে গ্র্যান্ড মুফতি দেখা যায় না।

তার মতে, আমাদের একটি বোর্ড দরকার, সম্মিলিত ফতোয়া দরকার। একজন মুরুব্বি থাকতে পারেন। তাতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু গ্র্যান্ড মুফতি শব্দটি অপছন্দনীয় এক্ষেত্রে। যিনি মুরুব্বী হবেন তিনি সহ অন্যরা মিলে ফতুয়া দিবেন। কিন্তু বোর্ড কোন এক ব্যক্তির মুখপাত্র হবে না। এক্ষেত্রে মুরুব্বিও ফিকাহ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে হবে।

আরো পড়ুন-

গ্র্যান্ড মুফতি নয়, মুফতি বোর্ডেই আস্থা হাইয়াতুল উলইয়ার
সংকটকালীন জাতীয় ফেকহী টিম গঠন করলো আওয়ার ইসলাম

-ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ