বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


হবিগঞ্জে অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে আলেমসমাজ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: স্মরণকালের ভয়াবহ এ দুর্যোগে সারাদেশের মানুষ যখন খাদ্যসংকটে ভুগছে, তখন অসহায় ও অভাবী পরিবারের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আলেমদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিনির্মাণ’ও হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার সর্বস্তরের আলেমসমাজ।

গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর জেলার মুড়িয়াউক ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের ৮১ টি পরিবারের মাঝে গোপনয়তায়তা রক্ষা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে দেয়া হয়েছে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি পেঁয়াজ ও ২ কেজি আলুর একটি ফুডপ্যাক।

এ বিষয়ে তেঘরিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি মোহাম্মদ ইকবাল হুসাইন বলেন, এই দুর্যোগ দুনিয়াবাসীর উপরে আল্লাহতালার পক্ষ থেকে শাস্তি এবং আমাদের জন্য পরীক্ষা। আমাদের সীমাতিরিক্ত পাপাচারের কারণেই শাস্তি এসেছে। এবং আমাদের তাওবা ও নেক কাজের মাধ্যমেই আল্লাহ এ শাস্তি দূর করে দিতে পারেন।

এই শাস্তিমুলক পরীক্ষায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে। মানুষের বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এবং আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্যই আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্য দিয়ে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি। সমাজের সামর্থ্যবান ও বিত্তবানরা এগিয়ে এলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সংকটে হিম্মত ধরে রাখা আমাদের জন্য সহজ হবে।

এ ত্রাণ তৎপরতার অন্যতম উদ্যোক্তা তেঘরিয়া গ্রামের সচেতন আলেম ও সমাজকর্মী মাওলানা আশরাফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, যারা অর্থ শ্রম সময় ও পরামর্শ দিয়ে এই উদ্যোগের সহযোগী হয়েছেন, তাদেরকে আন্তরিক মোবারকবাদ। বিশেষভাবে ঢাকার আলেমদের সংগঠন ‘বিনির্মাণ’ এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। তাদের অংশগ্রহণ আমাদেরকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।

এ সময়ে আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা ও বিনির্মাণ এডমিন কবি মহিম মাহফুজ বলেন, বৈশ্বিক এ দুর্যোগের দিনে চেষ্টা ও সক্ষমতার সবটুকু ব্যয় করে মানুষের উচিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব, যা কিছু সম্ভব, ততটুকু নিয়েই চেষ্টা করে যেতে হবে, সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন স্বয়ং আল্লাহ।

যদিও মানুষের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের ক্ষুদ্র সহযোগিতা নিতান্তই অপর্যাপ্ত। লিস্ট ধরে ধরে বিতরণ করার পরেও, না দিলেই নয় এমন বেশকিছু পরিবার বাদ পড়ে গেছে। এই এলাকা ছাড়াও সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এরকম অভাবী মানুষের সংখ্যা আমাদের ধারণার থেকেও বেশি। এজন্য যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা জারি রাখা জরুরি।

আমাদের এই প্রচেষ্টা দুর্যোগকালীন পুরো সময়টাতেই অব্যাহত রাখতে চাই। সেজন্য সবার প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ, সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই।

নগদ খাদ্যসহায়তার পাশাপাশি কৃষিকাজ ও চাষাবাদে মানুষকে সহযোগিতা করা একান্ত প্রয়োজন মনে করে মহিম মাহফুজ সারাদেশের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, দীর্ঘ মেয়াদী লকডাউন পরিস্থিতির কারণে অচিরেই দেশে খাদ্যসংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। সে বিষয়ে আমাদের আরো বেশি সতর্ক ও তৎপর হওয়া প্রয়োজন। প্রতিটি ঘরে ঘরে মৌসুমী শাক-সবজির বীজ বিতরণ করার পরিকল্পনা থাকলেও আমাদের সীমিত সামর্থের মধ্যে সেটা সম্ভব হয়নি। অন্যান্য সংস্থা ও সামর্থবান ব্যক্তিদেরকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করব।

পরবর্তী উদ্যোগে যারা সহযোগিতা করতে চান, নিচের ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন মহিম মাহফুজ ০১৯৪৪-৬৪৯৫১৬ (বিকাশ)।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন মুফতি সাইফুর রহমান সাইফ, মুফতি আব্দুল হাফিজ কাসেমী, মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান দরস, হাফেজ মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, হাফেজ শাইখুল ইসলাম, হাজি আক্কল আলি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্বাস উদ্দিন ও মোরসালিন আহমদ পলিন, ছাত্রসমাজের প্রতিনিধি মোহাম্মদ বোরহানউদ্দিন, জাকারিয়া আহমদ, আবদুল হাফিজ হাবিব ও নাজমুস সাকিব।

ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ